
নিজস্ব প্রতিনিধি, ব্যারাকপুরঃ- একুশের পাশাপাশি আমাদের একটা উনিশেও আছে। ১৯৬১ সালের ১৯ মে আসামের শিলচরে মাতৃভাষা বাংলার মর্যাদার জন্য প্রাণ দিয়েছিলেন আসামের বরাক উপত্যকার ১১ জন। তাঁদের স্মরণে ১৯ মে শহিদ দিবস হিসাবে পালন করা হয়। বাংলাকে প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে গুলিতে যে ১১ জন শহীদ হয়েছিলেন তাঁরা হলেন- কমলা ভট্টাচার্য (মহিলা), শচীন্দ্র পাল, কানাই নিয়োগী, সুনীল সরকার, সুকোমল পুরকায়স্থ, কুমুদ দাস, চণ্ডীচরণ সূত্রধর, তরণী দেবনাথ, হীতেশ বিশ্বাস, বীরেন্দ্র সূত্রধর ও সত্যেন্দ্র দেব।
সেই দিনটিকে স্মরণ রাখতে হালিশহর বিপিন বিহারী গাঙ্গুলি পার্কের রামপ্রসাদ মুক্ত মঞ্চে বৃহস্পতিবার ‘১৯শে মে ভাষা দিবস উদযাপন’ করল হালিশহর সংস্কৃতি পরিষদ। প্রধান বক্তা ছিলেন প্রাবন্ধিক ও কবি মৃদুল দাশগুপ্ত, প্রাবন্ধিক বরুন চক্রবর্তী। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় কাউন্সিলর দীপঙ্কর চক্রবর্তী, বিএসপি-র মোটিভেশনাল স্পিকার তথা কাউন্সিলর বিশ্বজিৎ পাল সহ কয়েকজন সংস্কৃতি প্রেমী মানুষ। এছাড়াও ছিলেন হালিশহর সংস্কৃতি পরিষদের সভাপতি বীথি চট্টোপাধ্যায়, সম্পাদক মমতা ভট্টাচার্য সহ সদস্যবৃন্দরা।
ভাষা দিবসের তাৎপর্য নিয়ে মঞ্চে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন প্রধান বক্তা মৃদুল দাশগুপ্ত। তিনি বলেন, আমাদের কেন্দ্রীয় শাসন তারা বারবার চেষ্টা করছে হিন্দি ভাষাকে আমাদের ওপর চাপিয়ে দিতে। নানাভাবে হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ তোলা যেতে পারে। সংবিধানে রাজভাষা বলে কোনো ভাষার কথা নেই, কোনো রাষ্ট্রভাষার ও উল্লেখ নেই। একটা একশো বা দশ টাকার নোটে যে ভাষা গুলো দেওয়া আছে, সেগুলোই আমাদের সরকারি ভাষা। কেন্দ্রীয় সরকার অফিশিয়াল ল্যাঙ্গুয়েজ হিসেবে হিন্দি এবং ইংরেজি ভাষা ব্যবহৃত করে। কিন্তু কেন্দ্রের বিজেপি সরকার সারা দেশের উপর হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টার করছে। অতএব নিজের মাতৃভাষাকে রক্ষা করুন।
পাশাপাশি ১৯ মে নিয়ে প্রাবন্ধিক বরুন চক্রবর্তীও বক্তব্য রাখেন। ভাষা দিবস স্মরণে একটি শ্রুতি নাটক পরিবেশন করেন ডক্টর প্রদীপ কুমার গঙ্গোপাধ্যায়। এর পাশাপাশি অনুষ্ঠান মঞ্চে সংগীত, আবৃত্তি, কবিতা পাঠ ও নৃত্য পরিবেশিত হয়। এবং ভাষা দিবস উপলক্ষে মঞ্চের পাশে বন্দনা আর্টস স্কুলের পক্ষ থেকে অঙ্কনের কর্মশালার ও আয়োজন করা হয়।

মমতা ভট্টাচার্য জানান, বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষার জন্য ১৯শে মে আসাম-শিলচরে যে আন্দোলন সংগঠিত হয়েছিল, সেই আন্দোলনে একজন নারী সহ ১১জন বাঙালি বুকের রক্ত দিয়ে প্রাণ উৎসর্গ করেছিলেন। সেই সব শহীদদের স্মরণ করতেই নেওয়া হয়েছে এই কর্মসূচি।