সংবাদদাতা, বারাসাত :- বিজেপির উত্থান‌ই কি বারাসাত দ্বিজহরি দাস কলোনীর অশান্তির অন‍্যতম কারন? নাকি শাসকদলের হারানো জমি পুনরুদ্ধারের প্রচেষ্টায় গন্ডগোলের মূলে রয়েছে? এখন এই প্রশ্ন‌ই ঘুরপাক খাচ্ছে রাজনৈতিক মহলে। তবে, এর উত্তর খুঁজতে গিয়ে যে তথ্য সামনে এসেছে,তা ভোটে গেরুয়া শিবিরের আধিপত্য। বারাসত পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যে পড়ে দ্বিজহরি দাস কলোনী। এবারের লোকসভা ভোটে এই ওয়ার্ড থেকেই ভালো ফল করে গেরুয়া শিবির।শাসকদলকে পিছনে ফেলে তৃনমূলের দখলে থাকা এই ওয়ার্ডে এক নম্বরে উঠে আসে বিজেপি।এরপর‌ই গেরুয়া শিবিরের উত্থানে রাজনৈতিক সমীকরণ রাতারাতি পাল্টে যায়।এখানকার অধিকাংশ বাসিন্দাই শাসকদল ছেড়ে বিজেপির পতাকা হাতে তুলে নেয়।এতদিন, যাদের হাতে বাসিন্দাদের আক্রান্ত হ‌ওয়ার অভিযোগ উঠেছে,সেই তৃনমূলের নেতা-কর্মীরা হামলার আশঙ্কায় এলাকা ছাড়তে বাধ্য হন! সূত্রের খবর, গতকাল সন্ধ্যায় এলাকাছাড়া শাসকদলের নয় নেতা-কর্মীকে ফের এলাকায় ঢোকাতে গেলেই রুখে দাঁড়ান বিজেপি কর্মীরা। তাঁরা অভিযোগ করেন,”পুলিশ শাসকদলের ওই সমস্ত কর্মীদের ঢুকিয়ে ফের এলাকাকে অশান্ত করতে চাইছে!যা কখন‌ই মেনে নেওয়া হবেনা”। এনিয়ে পুলিশের সঙ্গে বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েন এলাকার লোকজন।অভিযোগ,জোর করে পুলিশ ঘরছাড়া তৃনমূলের নেতা-কর্মীদের ঢোকাতে গেলে বাসিন্দাদের সঙ্গে খন্ডযুদ্ধ বেঁধে যায়।পুলিশ লক্ষ‍্য করে ইট পাটকেল ছোঁড়া হয়। বোমাবাজিও করা হয়েছে বলে অভিযোগ। সংখ্যায় কম থাকায় বেগতিক বুঝে প্রথমে পিছু হটতে বাধ্য হয় পুলিশ।এরপর,জেলার বিভিন্ন থানা থেকে পুলিশ,Raf ও কমব্যাট ফোর্স নিয়ে এসে কাদানে গ‍্যাসের শেল ফাটিয়ে এলাকার ভিতরে ঢোকে জেলা পুলিশ কর্তারা। তাঁরা ঢোকার পরেও মুহুর্মুহু বোমা পড়তে শুরু করে বলে অভিযোগ।গোটা এলাকা কার্যত যুদ্ধ ক্ষেত্রের চেহারা নেয়!অভিযোগ, হামলাকারীদের ধরার নামে পুলিশ নিরীহ বাসিন্দাদের ঘরে ঢুকে ঢুকে মারধর,ও ভাঙচুর করে। তাতে বেশ কয়েকজন পুরুষ ও মহিলা আহত হন। দীর্ঘ, পাঁচ ঘন্টার‌ও বেশি সময় পর পরিস্থিতি আয়ত্তে আসে। তবে, ঘটনায় যথেষ্ট আতঙ্কিত এলাকার লোকজন। এদিকে, পুলিশ যাতে এলাকায় ঢুকতে না পারে, তারজন্য আগে থেকেই রাস্তার মোড়ে ইট ফেলে রাখা হয়েছিল! যদিও সেই বাধা অতিক্রম করে পুলিশ এলাকার ভিতরে ঢোকে।অন‍্যদিকে, এনিয়ে জেলা পুলিশের শীর্ষ কর্তারা মুখ খুলতে চাননি। যদিও পুলিশের এক অফিসার বলেন,”ক্লাবের ভিতরে একজনকে আটকে রাখার খবর পেয়েই তাঁরা ওই এলাকায় যান তাকে উদ্ধার করতে।এরপর‌ই,এলাকার লোকজন আচমকা ইটপাটকেল ছুড়তে শুরু করে। বোমাবাজিও করা হয়।তারপরেই পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাঁদানো গ্যাসের শেল ফাটায়। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, পুলিশ ও জনতা খন্ডযুদ্ধে পাঁচজন পুলিশ কর্মী আহত হয়েছেন। তাঁদের চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় বারাসত জেলা হাসপাতালে।হারান চন্দ্র সরকার ও অজয় দাস নামে দুই পুলিশ কর্মীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁদের সেখান থেকে বারাসতের‌ই এক বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। পুলিশের ওপর হামলা, অশান্তি পাকানোর অভিযোগে পুলিশ ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। বাকি হামলাকারীদের খোঁজেও তল্লাশি চলছে। পরিস্থিতি এখন থমথমে।