বারাসাত :- এক ঘণ্টার বেশি সময় সওয়াল জবাবের পরে ঝুলে রইল রাজীব কুমারের গ্রেপ্তারি পরওয়ানা এড়ানো সংক্রান্ত আবেদনে বারাসত জেলা জজের নির্দেশ দানের বিষয় । ডিস্ট্রিক্ট জাজ সব্বর রশিদি সাড়ে তিনটে নাগাদ শুনানির শেষে নির্দেশ দান রিসার্ভ রেখে আদালত কক্ষ সাময়িক ভাবে ত্যাগ করলেন । অপেক্ষা অর্ডারের যা আপাতত পেন্ডিং।
ইতিপূর্বে রাজীব কুমারের গ্রেপ্তারি পরওয়ানা এড়ানোর জন্য তাঁর আইনজীবিদের বারাসাত আদালতে করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এক ঘন্টা ধরে বাকযুদ্ধ জারি ছিল রাজীব কুমার এর আইনজীবী সিবিআই আইনজীবীদের মধ্যে। দীর্ঘ চাপান-উতোর চললেও শুনানির মূল অংশ জুড়ে থাকলেন সিবিআইয়ের আইনজীবী। দীর্ঘ এক ঘন্টা 5 মিনিট শুনানি চললেও তারমধ্যে 55 মিনিট সময় তার বক্তব্য পেশ করলেন সিবিআইয়ের আইনজীবী কেসি মিশ্রা প্রথমে মিনিট পাচেঁক ও পরে তার চেয়েও কম সময়ে নিয়ে রাজীব কুমারের হয়ে সকল জবাব করলেন রাজীব কুমারের আইনজীবী গোপাল হালদার । রাজীব কুমার এর আইনজীবী গোপাল হালদার প্রথমেই তাঁর আবেদনের পক্ষে যুক্তি খাড়া করেন। এরপর একের পর এক যুক্তি সাজিয়ে রাজীব কুমারকে কার্যত অভিযুক্তের তকমা দেন । সিবিআইয়ের আইনজীবী প্রথমে চিট ফান্ড স্ক্যাম, সারদা স্ক্যাম এর কথা টেনে আনেন । কিভাবে সাধারণ মানুষকে প্রতারিত করা হয় তা তুলে ধরে সেই দুর্নীতিতে প্রভাবশালীদের যুক্ত থাকার বিষয়টি তুলে একে একে অর্ণব ঘোষ ও রাজীব কুমার কে মূল প্রতিপাদ্যর মধ্যে টেনে আনেন সিবিআই আইনজীবী। সিবিআই আইনজীবীর বক্তব্য ছিল অর্ণব ঘোষের বিরুদ্ধে মুখ খুলে গ্রেফতার হয়েছিলেন কুণাল ঘোষ । অর্ণব পরিচালিত হন রাজীব কর্তৃক । এভাবেই সাধারণ মানুষ কে বঞ্চিত করা সারদা তথা চিট ফান্ডের বিরুদ্ধে মুখ খুলেও তদন্ত হয় নি । এছাড়াও একটি দৈনিকের প্রতিবেদন এবং মালদার সংসদের নাম তুলে আনেন সিবিআই । রাজীব কুমারের বিরুদ্ধে আইনী পদক্ষেপ নেওয়ার চেষ্টা করলেও তদন্তে সহযোগিতা করেন নি পুলিশ প্রশাসনে যুগ্ম ভূমিকায় থাকা রাজীব কুমার । রাজ্য পুলিশ কার্যত নিষ্ক্রিয় ছিল বলে তাদের বক্তব্য । তদন্ত অগ্রসর হতে বাধা পেয়েছে । অথচ সারদা অভিযুক্ত দেবযানী মুখোপাধ্যায় বলেছিলেন মিডল্যান্ড পার্কের অফিস থেকে খাতা এবং তথ্যাদি গ্রহণ করেছ সিট যার দায়িত্বে ছিলেন রাজীব । অভিযুক্ত দেবযানী মুখোপাধ্যায় পার্কের অফিস থেকে খাতা এবং তথ্যাদি সিট যে গ্রহণ করেছে সে কথা জেলা জজ্কে জানান সিবিআইয়ের আইনজীবী কেসি মিশ্র। তিনি এও জানান বিভিন্নভাবে তদন্তের গতি রুদ্ধ করে দেওয়া হয়েছে অথচ প্রাথমিকভাবে হাইকোর্টে রাজীব কুমারের রক্ষাকবচ মিললে ও পরবর্তীতে সেই রক্ষাকবচ তুলে নিয়েছে হাইকোর্ট । সমাজের স্বার্থে এবং হোয়াইট কলার ক্রাইম রুখতে রাজীব কুমারের অগ্রিম জামিনের আবেদন মঞ্জুর হওয়া বাঞ্ছনীয় নয় বক্তব্য পেশ করে সিবিআই । এবং এখানেই বিরোধিতা করেন রাজীব কুমার এর আইনজীবী গোপাল হালদার। তিনি জানান পুলিশ প্রশাসনের শীর্ষ কর্তা ছিলেন না রাজীব কুমার। তাঁর ওপরে আরো পদস্থ আধিকারিক ছিলেন । রাজীবের আইনজীবীর প্রশ্ন কিভাবে ১৩ তারিখে হাই কোর্টের নির্দেশের চার দিনের ব্যবধানে রাজীব কুমারের স্ট্যাটাস সাক্ষী থেকে অভিযুক্ত হিসেবে বদল করতে চায় সিবি আই ? যেহেতু এখনও অভিযুক্ত নন সে ক্ষেত্রে দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে চলা একটি মামলায় ছটি সাপ্লিমেন্টারি চার্জ শিট হলেও রাজীব কুমার তদন্তে অভিযুক্ত না থেকে তিনি কেন রক্ষা কবচ পাবেন না সে প্রশ্ন আদালতের সামনে তুলে ধরেন রাজীব কুমারের আইনজীবী গোপাল হালদার ।