সৌগত মন্ডল, বীরভূম :- একাধিক দাবি-দাওয়া নিয়ে হাওড়া স্টেশন থেকে ফরশোর রোড হয়ে নবান্ন-যাত্রা শুরু করেন প্রায় কয়েকশো এসএসসি চাকরিপ্রার্থী। কিন্তু মাঝপথেই তাঁদের বাধা দেয় পুলিশ। দু’পক্ষের সাময়িক বিবাদ হয়। পরে পিছু হটে যায় চাকরিপ্রার্থীরা । তাঁদের দাবি, “হয় চাকরি না হলে মৃত্যু । মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন, তিনি চাকরি না দিলে আমাদের মৃত্যু দিক ।
বীরভূম থেকে এসএসসি নন টিচিং গ্রুপের ওয়েটিং প্রার্থীদের মধ্যে থেকে বিপ্লব কুমার সাহা জানান,” মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে আমরা এসএসসি নন টিচিং গ্রুপ সি ও ডি ওয়েটিং প্রার্থী। নবম-দশম, একাদশ-দ্বাদশ র সঙ্গে একসময় ভাগ্যের পরিহাসে যেমন বঞ্চনা করা হয়েছিল , আমরাও একই রকম বঞ্চিত হয়েছি। কিন্তু আপনার আশীর্বাদে ওরা আজ আপটুডেট ভেকেন্সি পেয়ে সফল ও খুব বেশি সংখ্যক ওয়েটিং বেকারত্বের হাত থেকে মুক্তি পাচ্ছে। ম্যাডাম আমাদের প্রায় ৭ হাজার মতো প্রার্থীকে ওয়েটিং রাখা হয়েছে, ওয়েটিং এ রাঙ্ক থাকা বহু প্রার্থীকে অজানা কারণে পিডিএফ মেরিট লিস্ট দেওয়ার সময় বাদ দেওয়া হয়েছে, অনলি মেল ক্যাটাগরি কি রাঙ্ক করা প্রার্থীদের বাদ দেওয়া হয়েছে, বিভিন্ন জেলায় আগে না থাকলেও পরে অনলি ফিমেল প্রার্থী যুক্ত হয়েছে। অথচ শিক্ষামন্ত্রী বলছেন রুলস মেনেই নাকি ওয়েটিং মেরিট লিস্ট তৈরি করা হয়েছে, কিন্তু কোন রুলস এবং সেটা কিভাবে তার কোনো হিসাব মিলছেনা।
দীর্ঘ একবছর ধরে চেয়ারম্যান, শিক্ষামন্ত্রী আমাদের আশ্বাস ও সান্ত্বনা দিয়ে আসছিলেন যে আপডেট সিটে ওয়েটিং থেকে বিরাট সংখ্যক প্রার্থীকে পরবর্তী ফেজে নেওয়া হবে,কিন্তু শুধুই আশ্বাস ও আমরা গ্রুপ সি ও ডি প্রার্থী বলে অবহেলা। কাজের কাজ কিছু হয়নি, কোনো আপডেট ভাকেন্সি তে নিয়োগ হয়নি। ওনাদের সাথে আমরা নিয়মিত যোগাযোগ রাখি, ওনারা এখন উল্টো কথা বলে বেঁকে বসছেন। একবার বলছেন হেড মাস্টাররের পর আমাদের ব্যাপারটা ধরবেন, আরেকবার বলছেন আপারের ভেরিফিকেশন র পর, অথচ আপারের ইন্টারভিউ শেষ হয়ে গেল তবুও কিছুই করছেন না। ওনারা শুধু মিষ্টি কথা বলে সময় নিচ্ছেন এবং আমাদের আপডেট ভাকেন্সি তে নিয়োগের প্রসেস টা কোনো এক অজানা কারনে, অচেনা নির্দেশে পিছিয়েই দিচ্ছেন। যখন নবম দশম, একাদশ দ্বাদশ, কর্মশিক্ষা, শারীরশিক্ষার ওয়েটিং প্রার্থীরা প্রেস ক্লাবের সামনে দীর্ঘ অনশন করছিল,আমরা গ্রুপ সি ও ডি ওয়েটিং প্রার্থীরা পরে জানতে পেরে আমরাও ওদের সাথে যোগ দিতে চেয়েছিলাম কিন্তু পুলিশ নতুন করে আর কাউকে বসতে দেয়নি তাই আমরা ওই স্থানের কিছুটা দূরে নিজেরাই অনশনে বসি। যেদিন মুখ্যমন্ত্রী ধর্নামঞ্চে এসে অনাশনকারী দের কথা দিলেন এবং দরকারে আইন চেঞ্জ করে, ওয়ান টাইম কিছু করা যায় কিনা তার আশ্বাস দিলেন তখন ওদের অনশন উঠে গেল,আমরাও অনেক আশা নিয়ে বাড়ি ফিরে যাই।
ভোটের পর আমরা কমিশন, শিক্ষামন্ত্রী, শিক্ষাসচিব দের কাছে আমাদের অনুরোধ নিয়ে বহুবার ডেপুটেশন জমা দিয়েছি কিন্তু ওনারা কেউই আমাদের পাত্তা দেননি, আমরা চেয়ারম্যান স্যারের সাথে বহুবার দেখা করি, শিক্ষামন্ত্রী র সাথেও বহুবার কথা বলি,মনীষ জৈন স্যার সাথে দেখা করার চেষ্টা করি কিন্তু কোনো সমাধান হয়নি”।
উনাদের কাছ থেকে কোনো আশার আলো না দেখতে পেয়ে শেষে আমরা আপনার (মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী) কালীঘাট অফিসে যাই, আপ টু ডেট ভেকেন্সি নিয়োগ করার অনুরোধ নিয়ে ও দ্রুত পরবর্তী ফেজ করা সহ অন্যান্য অনুরোধ নিয়ে আমাদের সমস্ত ব্যাপারটা লিখিত আকারে অফিসে জানাই। কয়েকদিন কেটে যাওয়ার পরেও চেয়ারম্যান ও শিক্ষামন্ত্রী র কাছ থেকে কোনো আশ্বাস না পাওয়ায় আমরা আবার আপনার ( মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী র) সাক্ষাৎ চেয়ে কালীঘাট অফিসে একটি লিখিত আবেদন জানাই, কিন্তু দীর্ঘদিন হয়ে গেলও আমরা কোনো সেই আবেদনের উত্তর এখনও পাইনি।
নবম দশম, একাদশ দ্বাদশ রা অনশন করেছিল কিছুদিন আগে ওরা আপনার (মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী)স্নেহধন্য র সাক্ষাৎ পেয়ে এবং আপনাকে সামনা সামনি পেয়ে ওদের সমস্ত ব্যাপারটা জানিয়ে ওরা বিরাট সংখ্যক সিট আপডেট র আশ্বাস পেলো। আমরা শুধু বিশ্বাস করলাম, তাই না পেলাম মুখ্যমন্ত্রী র সাক্ষাৎ, না হলো আমাদের সিট আপডেট, আর না পেলাম আমরা সফলতা । আমরা প্রথম থেকেই সবজায়গায় অবহেলিত ও লাঞ্ছিত এবং এখনও সেটাই চলছে। কিভাবে সুফল পাবো, কবে পাবো, আদৌ কোনোদিন পাবও কিনা জানিনা। আমরা গ্রুপ সি ও ডি পদ প্রার্থী বলে আমাদের কেউই গুরুত্ব দেয়না। আমরা প্রতিক্ষেত্রে অবহেলিত ও বঞ্চনার শিকার ।
বিগত কয়েক মাসে আমরা আচার্য সদন, বিকাশ ভবন, কালীঘাট অফিস সহ এত জায়গায় ছুটছি কিন্তু কোথাও কাজ হচ্ছে না, কেও গুরুত্ব দিচ্ছেনা।আমরা আমাদের বক্তব্য সরাসরি আপনাকে (মুখ্যমন্ত্রী) কে জানাতে চাই কারণ আমাদের এখন বেঁচে থাকাটাই আপনার উপর নির্ভর দিদি! দিদি (মুখ্যমন্ত্রী) আমরা বেকারত্বের তীব্র জ্বালায় জ্বলছি। হতাশা ও দারিদ্রের জ্বালায় আমাদের ও আমাদের পরিবারের খুবই কষ্টের মধ্যে দিন কাটছে। । আমাদের আপনি আপনার করুনা দিয়ে আমাদের মতো অভাগা ওয়েটিং প্রার্থী দের বেশি সিট সংখ্যা বাড়িয়ে বাঁচান.. অজান্তে ভুল কিছু লিখে ফেললে ক্ষমা প্রার্থী।